নিউজ ডেস্ক:
করোনাভাইরাস পৃথিবী থেকে কবে ও কিভাবে বিদায় নিবে এ প্রশ্নটি এখন পৃথিবীর সকল মানুষের মনে। এই প্রাণঘাতী ভাইরাসটি পুরো বিশ্বকে স্তব্ধ করে দিয়েছে এবং আতঙ্কিত করে রেখেছে সারা বিশ্বের মানবজাতিকে। এই আতঙ্ক ও প্রশ্নের উত্তর নিয়ে এসেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিজ্ঞানীরা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী সৌমিয়া সোমিনাথান এক বিবৃতিতে বলেন, আমি চার থেকে পাঁচ বছরের একটি সময়সীমার কথা বলতে চাই। এই সময়ের মধ্যে আমরা এটা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব।
তিনি বলেন, সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে ভ্যাকসিন। তবে এর কার্যকারিতা এবং সুরক্ষা নিয়েও যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। একই সঙ্গে ভ্যাকসিন উৎপাদন ও সুষম বন্টন নিয়েও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।
এদিকে, জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির হেলথ ইমারজেন্সি প্রোগ্রামের নির্বাহী পরিচালক ডা. মাইক রায়ান বলেন, কবে নাগাদ এই রোগ থেকে মুক্তি মিলবে তা কেউ অনুমান করতে পারছে না।
তবে বিভিন্ন দেশে লকডাউন শিথিলের বিষয়ে সতর্ক করেছেন তিনি। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, লকডাউন খুলে দিলে কি হয় তা দেখার জন্য আমাদের এটা করা উচিত নয়।
তিনি বলেন, মানুষের শরীরে নতুন একটি ভাইরাস প্রবেশ করেছে। তাই এ থেকে আমরা কখন বেরিয়ে আসতে পারব তা এখনই অনুমান করা কঠিন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এখনই নভেল করোনাভাইরাস মহামারির সমাপ্তি হচ্ছে না। বছরের পর বছর এতে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারাবে মানুষ।
সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, মানবজাতির জন্য দীর্ঘস্থায়ী সংকট হিসেবে কমিউনিটিতে রয়ে যাবে এই ভাইরাস। তাই বিশ্ব নেতাদের এর ওপর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রণের একটি বিন্দুতে পৌঁছাতে হবে, যাতে এটা আর মহামারি না থাকে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বুধবার এমন কথা জানিয়ে বলেছে, কোভিড-১৯ হবে এইডসের মতো, যা কখনোই শেষ হওয়ার নয়। তাই এই ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। দীর্ঘদিন ভাইরাসটির সংক্রমণ এভাবে ছড়াতে থাকলে তার ফল মারাত্মক হবে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।
গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম প্রাণঘাতী করোনার উপস্থিতি ধরা পড়ে। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ২১২টি দেশে এই ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে।
বিশ্বে ৪৪ লাখ ২৯ হাজার ৮৮৪ প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছে ২ লাখ ৯৮ হাজার ১৭৪ জন। তবে ইতোমধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছে ১৬ লাখ ৫৯ হাজার ৭৯৭ জন।
ইতোমধ্যেই বিভিন্ন দেশে এই ভাইরাসের ভ্যাকসিন উন্নয়নের কাজ চলছে। অনেক দেশেই করোনার ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগও হয়েছে।